রাজশাহী ব্যুরো ॥ রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামে কাজীপাড়া আইএফএম কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে নিরাপদ কৃষিপণ্য বাজারজাত করণের লক্ষ্যে আম বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। উক্ত কার্যক্রম উদ্বোধন করেন পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন নাহার ভুঁইয়া।
সমবায় ভিত্তিক এই কৃষক সংগঠনের সদস্যদের নিজ নিজ বাগানের আম সবাই এক জায়গায় সংগ্রহ করে ক্লাবের কালেকশন পয়েন্টে নিয়ে আসে প্রথমে। তারপর সেগুলো ওজন করে একটি রেজিস্ট্রারে সদস্যদের নামে এন্ট্রি দেওয়া হয়। এরপর বিজনেস ফোকাল পারসন (বিএফপি) এর মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ী বা প্রাণসহ বিভিন্ন কোম্পানি ও আড়তদারের সাথে যোগাযোগ করে কালেকশন পয়েন্ট থেকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এছাড়াও অনলাইন বা মোবাইলে কেউ বুকিং দিলে তাদের ঠিকানায় কুরিয়ারের মাধ্যমে প্যাকিং করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাজারমুƒল্য অনুসারে আম সরবারহকারীদের টাকা দেওয়ার পর লভ্যাংশের ৩৫ অংশ সংগঠনের ফান্ডে রেখে বাকি ৬৫ বিএফপি (যারা কেনা বেচার মূল দায়িত্বে থাকে) সদস্যদের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে একদিকে সদস্যদের পরিবহন খরচ যেমন বাঁচে, অন্যদিকে আম বিক্রির জন্য নিজেদের আলাদাভাবে দুঃশ্চিন্তা করতে হয় না।
সংগঠনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানজুর রহমান সাকিব জানান, উপজেলা কৃষি অফিস পুঠিয়ার সহযোগিতায় এ সংগঠন ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনের প্রত্যেক সদস্য প্রতি মাসে নিন্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক চাঁদা প্রদান করে মাসিক মিটিং এ সকল আয় ব্যয়ের হিসাব প্রদান করা হয়। প্রতিবছর তারা আমসহ বিভিন্ন ফসল যেমন লাউ, বেগুন, লিচু, কলা, পেয়ারা তারা কালেকশন পয়েন্টের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। সংগঠনের প্রত্যেক সদস্য উপজেলা কৃষি অফিসের আইএফএমসি প্রকল্প থেকে কৃষক মাঠ স্কুলের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। তারা বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জনকল্যাণমূলক কাজ হিসেবে সবাইকে মাস্ক বিতরণ, অসহায় মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে। আর সংঠনের সার্বিক অগ্রগতি দেখভাল করেন ভাংড়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোক্তাদেরুল হক।
ক্লাবের নারী সদস্য পলি জানান, আই এফ এম সি প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমরা নিজেদের বসত বাড়ির লাউ, সবজি, ডিম এখানে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হই।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন নাহার ভুঁইয়া জানান, ডিএই-ডানিডার সহযোগিতায় সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কম্পোনেন্ট (আই এফ এম সি) প্রকল্প থেকে ২০১৭ সালে কাজীরপাড়া গ্রামের আগ্রহী কৃষকদের নিয়ে কৃষক মাঠ স্কুলের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। স্কুলে কৃষি, মৎস্য ও পশু পালন বিষয়ে হাতে কলমে শিখানো হয় এবং স্কুলের সদস্যদের নিয়ে পরে কৃষক সংগঠন গড়ে তোলা হয়। সেই সাথে বাজার সংযোগ সৃষ্টির জন্য কালেকশন পয়েন্ট নির্মাণ করা হয়, যাতে করে কৃষকরা নিজেদের পণ্য নিন্দিষ্ট জায়গায় সরবরাহ করে বিক্রি করতে পারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলা কৃষি অফিস সবসময় এ ধরনের সংগঠন গড়ে তোমার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে, যাতে করে কৃষক তার নিজের উৎপাদিত পণ্য কোন মাধ্যম ছাড়াই নিজেরাই নিজেদের পণ ভোক্তা লেভেলে বিক্রি করতে পারে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোক্তাদেরুল হক, সাংবাদিক মোহাম্মদ আলীসহ প্রমূখ।
Leave a Reply